পন্ডিত অনিমেষ শাস্ত্রী
বঙ্গ জীবনে শিল্প আর সাহিত্য যতটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা বাণিজ্য ঠিক ততটা নয়, এ অভিযোগ বহুদিনের, সত্য মিথ্যা নিয়ে পরে বলছি তবে এটা ঠিক যে মা দূর্গার পুত্র সন্তান দের মধ্যে সরস্বতী যতটা আমাদের কাছের গণেশ হয়তো ততটা নন,গণেশ মূলত ওই অবাঙালি ব্যবসায়ীদের দেবতা হয়েই রয়ে গেছেন তাই শিল্প নগরী মুম্বাইতে তার কদর বেশি |তবে ছবি টা কিন্তু দ্রুত বদলাতে শুরু করেছে|ইদানিং গণেশ আরাধনায় মেতে উঠতে দেখা যাচ্ছে বাঙালি দের| গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে এবছর এই কভিড পরিস্থিতি তেও বাঙালির উন্মাদনা তুঙ্গে|এমনকি মহারাষ্ট্রের মতো গণেশ পুজো বারোয়ারি পুজোর চেহারা নিয়েছে বললেও বোধ হয় ভুল বলা হবে না|
বাঙালি প্রসঙ্গে কালী প্রসন্ন সিংহ বলেছিলেন কালীপ্রসন্ন সিংহ লিখেছিলেন, ‘কলকাতা হুজুগের শহর। হুজুগ ছাড়া কলকাতা বাঁচতে পারে না’ আসলে আমরা বাঙালিরা উৎসব মুখর তাই ধর্মীয় হোক শাস্ত্রীয় হোক যেকোনো পুজো আমরা উৎসবের আকারে পালন করতে ভালো বাসি|ইদানিং গণেশ পুজোও সেই তালিকায় ঢুকে পড়েছে এবং যায়গা করে নিয়েছে|
আমরা বাঙালিরা ঈদ, বড়দিন দুর্গাপূজা সবই সমান আগ্রহে এবং উৎসাহে পালন করি, এক্ষেত্রে আমাদের দর্শন হলো ধর্ম যার যার উৎসব সবার|
গোটা বিশ্ব যখন সাম্প্রদায়িক শক্তির চোখ রাঙানি দেখছে তখন এই ফেস্টিভ্যাল কে কেন্দ্র করে একটা জাতী যদি একতা প্রদর্শন করে, উৎসবে মেতে ওঠে তার থেকে ভালো আর কি হতে পারে|
এতো কিছুর মাঝে অবশ্যই শাস্ত্র কে ভুললে চলবেনা, গণেশ চতুর্থী মূলত গনেশের জন্ম তিথি,
পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, বিঘ্নহর্তা শ্রী গণেশ ভাদ্রপদ শুক্ল চতুর্থীর দিন জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তাই এই দিন গণেশ চতুর্থী বা বিনায়ক চতুর্থী পালন করা হয় ও গণেশ পুজো অনুষ্ঠিত হয়|ডিজে মিউসিকের মাঝে, উদ্দাম নাচ গানের মাঝে এই শাস্ত্রীয় দিকটি বাঁচিয়ে রাখতে অবশ্য আমার মতো দুচার জন শাস্ত্রী বরাবরই থাকবে|এবার ও আমি আমার মতো করে গণেশ চতুর্থী পালন করবো|আপাদের সকলকে আমার ও আমার রোজনামচা পরিবারের তরফ থেকে গণেশ চতুর্থীর শুভেচ্ছা|