পন্ডিত অনিমেষ শাস্ত্রী
দূর্গাপুজো আর চন্ডীপাঠ প্রায় সমার্থক এবং অভিন্ন কারন চন্ডী পাঠের মাধ্যমে মাতৃ শক্তির আহ্বান করা হয় তার মহিমা বর্ণন করা হয়|
সামনেই মহালয়া, বাঙালির নস্টালজিক হওয়ার সময়, গঙ্গা স্নান, তর্পন , রেডিওয় মহিষাসুর মহিষাসুর মর্দিনী, সব মিলিয়ে যে আধ্যাত্মিক পরিমন্ড তৈরী হয় তার রেশ থেকে যায় সেই বিজয়া দশমী অবধি|
সব কিছুকে ছাপিয়ে যায় আজ ও মহালয়ায় বেজে ওঠা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর চন্ডী পাঠ। আমরা এই কন্ঠ শুনতে শুনতে বড় হয়েছ, হয়তো আগামী দিনে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও তাই করবে|জানিনা, হওয়া তো উচিৎ|
চন্ডীপাঠের পাশাপাশি বেতারে দেবী দুর্গার পৌরাণিক কাহিনি অবলম্বনে দুই ঘণ্টার সঙ্গীতালেখ্য মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়,এই অনুষ্ঠানটির গ্রন্থনা করেছিলেন বাণীকুমার ভট্টাচার্য এবং সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন পঙ্কজকুমার মল্লিক।বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভাষ্য ও শ্লোকপাঠ করেন যদিও তার চন্ডীপাঠ নিয়ে কিঞ্চিৎ বিতর্ক ও হয়েছিলো কারন তিনি জাতে ব্রাহ্মন ছিলেন না, যদিও সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি, একবার মহানায়ক উত্তম কুমার তাকে রিপ্লেস করছিলেন|জনতা খেপে গেলে এক্সপেরিমেন্ট বন্ধ হয়|আবার ফিরে আসেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র স্বমহিমায়|
শাস্ত্রে আছে দুর্গা পুজোর সময় চন্ডী পাঠ করলে মা এতটাই প্রসন্ন হন যে ভক্তের মনের সব ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, চন্ডী পাঠের পাশাপাশি ইচ্ছা হলে দুর্গা সপ্তশান্তিও পাঠ করা যায় তাতে সমান পুন্য লাভ হয়|
প্রসঙ্গত বলা যায়, রাষ্ট্রপতি হয়েও মাননীয় প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রতিবার তার বীরভূমে কীর্ণাহারের গ্রামে এসে শাস্ত্র মতে চন্ডী পাঠ করতেন|সনাতন ধর্মের প্রতি নিষ্ঠা ও ভক্তি থাকলেই সম্ভব এই একাত্ম বোধ আনা|
চন্ডীর একটি শ্লোকে আছে
ত্বয়ৈব ধার্যতে সর্বং ত্বয়ৈতৎ সৃজতে জগৎ।
ত্বয়ৈতৎ পাল্যতে দেবি ত্বমৎস্যন্তে চ সর্বদা
অর্থ্যাৎ হে দেবি, আপনিই এই জগৎ ধারণ করে আছেন। আপনি এই জগৎ সৃষ্টি করেন, আপনিই জগৎকে পালন করেন এবং প্রলয়কালে আপনি জগৎ ধ্বংস করেন।
চন্ডী নিয়ে লেখা মানে, এক ধারাবাহিক কর্ম কান্ড। তাই চলবে। আজ ছিলো ভূমিকা। প্রথম কিস্তি।
দেবীর কৃপায় সুন্দর হোক পৃথিবী সনাতন ধর্ম আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ট আসন লাভ করুক|আনন্দ হি কেবলম, জয় মা চন্ডী|